ঢাকা , বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ১৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
কেরানীগঞ্জ-৩: পলকে থামানো মানে তৃণমূলকে থামানো এবার ভূতের চরিত্রে দেখা যাবে রাশমিকাকে পুরুষদের প্রতি যে অনুরোধ করলেন তামান্না আইনি জটিলতায় জড়ালেন সুহানা যদি অপরাধী হতাম তাহলে চুপচাপ থাকতাম: জয় ভক্ত অটোগ্রাফ চাওয়ায় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়লেন ফারিয়া ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করাতে সিঙ্গাপুরে যাচ্ছেন অপু-শাকিব নিজের অভিনীত সিনেমা দেখে আবেগে কেঁদে দিলেন ‘দ্য রক’ জটিল রোগে ভুগছেন জাংকুক সরকারের ওপর চাপ বেড়েছে ঋণ পরিশোধের কোনো ব্লেম নিতে রাজি নই শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ করবো-সিইসি ফরিদপুরের সালথায় পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা: স্বামী আটক ছড়িয়ে পড়া গুজবে কান না দিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রতি সেনাপ্রধানের আহ্বান অন্তর্বর্তী সরকার কি পথ হারিয়েছে প্রশ্ন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত ডাকসু নির্বাচনে বাধা নেই তিন প্যানেলের ইশতেহার ঘোষণা সবারই প্রতিশ্রুতি নারীবান্ধব ক্যাম্পাস ডাকসু নিয়ে কোনো ধরনের টালবাহানা চলবে না : ছাত্রদল হলত্যাগের নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করে বাকৃবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ট্রাম্পের নেতৃত্বে মার্কিন প্রভাব: চ্যালেঞ্জ ও অনিশ্চয়তা ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৩২ হাজার ছাড়ালো

সরকারের ওপর চাপ বেড়েছে ঋণ পরিশোধের

  • আপলোড সময় : ০২-০৯-২০২৫ ০৫:৩৬:০৬ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০২-০৯-২০২৫ ০৫:৩৬:০৬ অপরাহ্ন
সরকারের ওপর চাপ বেড়েছে ঋণ পরিশোধের
সরকারের ওপর ঋণ পরিশোধের চাপ বেড়েছে। সদ্য সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আগের তুলনায় কমেছে দেশে বৈদেশিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি ও অর্থছাড়ের পরিমাণ। কিন্তু বিপরীতে ঋণের কিস্তি পরিশোধের কারণে বৈদেশিক ঋণ শোধের পরিমাণ ক্রমেই বাড়ছে। চলতি অর্থবছরেও সরকারের ওপর ঋণ পরিশোধের চাপ বজায় থাকবে। মূলত প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির কারণে নতুন করে সহায়তার প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি অর্থছাড় কমে গেছে। তবে সরকার যেসব সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে সেগুলোর পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়ে এলে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে সহায়তার পরিমাণ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিগত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে যেখানে ১ হাজার ৭৪ কোটি ডলার প্রতিশ্রুতির বিপরীতে ১ হাজার ২৮ কোটি ডলার ছাড় করা হয়েছিল। সেখানে গত অর্থবছরে বৈদেশিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি সাড়ে ২২ শতাংশ এবং অর্থছাড়ের পরিমাণ ১৬ দশমিক ৬৩ শতাংশ কমেছে। গত অর্থবছরে বৈদেশিক সহায়তার সিংহভাগই ঋণ হিসেবে এসেছে। বিপরীতে যৎসামান্য ছিল অনুদানের পরিমাণ। ওই সময় দেশে ৩৮ কোটি ডলারের অনুদান এবং ৭৯৪ কোটি ডলারের বিদেশী ঋণ এসেছে। অথচ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৮৫ কোটি ডলারের অনুদান এবং ৯৮৯ কোটি ডলারের বিদেশী ঋণ এসেছিল। কিন্তু বিদেশী ঋণ ও অনুদান কমলেও গত অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বেড়েছে। ওই সময় সরকার ৪০৯ কোটি ডলার বিদেশী ঋণ পরিশোধ করেছে। তার মধ্যে ২৬০ কোটি ডলার আসল এবং ১৪৯ কোটি ডলার সুদ হিসেবে দিয়েছে সরকার । ২০২৩-২৪ অর্থবছরে যেখানে ৩৩৭ কোটি ডলারের বিদেশী ঋণ পরিশোধ করা হয়েছিল, যার মধ্যে ২০২ কোটি ডলার আসল এবং ১৩৫ কোটি ডলার সুদ ছিল। এক বছরের ব্যবধানে সরকারের বিদেশী ঋণ পরিশোধের পরিমাণ ২১ শতাংশ বেড়েছে। সূত্র জানায়, সরকার বিগত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকার ৩ বিলিয়ন ডলার বিদেশী ঋণ পরিশোধ করলেও বিদায়ী অর্থবছরে তা ৪ বিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে। পর্যায়ক্রমে ওই ঋণ পরিশোধের চাপ আরো বাড়বে। কারণ গত অর্থবছরে বিদেশী ঋণের আসল পরিশোধ যে গতিতে বেড়েছে, তার চেয়ে বেশি গতিতে সুদ বাবদ ব্যয় বেড়েছে। উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে বিদায়ী অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি ২৫২ কোটি ডলার ছাড় করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইডিএ) কাছ থেকে এসেছে ২০১ কোটি ডলার। জাপান দিয়েছে ১৫৮ কোটি ডলার। রাশিয়ার কাছ থেকে ৬৭ কোটি ডলার এসেছে। ৫৩ কোটি ডলার ছাড় করেছে এশীয় অবকাঠামো উন্নয়ন ব্যাংক (এআইআইবি)। চীন দিয়েছে ৪১ কোটি ডলার। ভারতের কাছ থেকে ১৮ কোটি ডলার পাওয়া গেছে। তাছাড়া ৬৫ কোটি ডলার ছাড় করেছে অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীরা। সূত্র আরো জানায়, বিগত সরকার দেশে বড় বড় মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বিপুল পরিমাণ বিদেশী ঋণ নিয়েছে। ওসব প্রকল্পের অনেকগুলোই বাস্তবায়ন হয়েছে। তবে এখনো চলমান বেশ কয়েকটির কাজ। এরই মধ্যে বাস্তবায়িত অনেক প্রকল্পের বিদেশী ঋণ পরিশোধ শুরু হয়েছে। দুই বছরের বেশি সময় ধরে বিদেশী ঋণ পরিশোধের চাপ ক্রমেই বাড়ছে। সামনে তা আরো বাড়বে। কারণ বিদায়ী অর্থবছরে উন্নয়ন প্রকল্পের কাজে ধীরগতির জেরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন দুই দশকের সবচেয়ে কম হয়েছে। গত অর্থবছর শেষে সংশোধিত এডিপির মোট বরাদ্দের ৬৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ ব্যয় হয়েছে, যেখানে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ছিল ৮০ দশমিক ৬৩ শতাংশ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সংশোধিত এডিপির আকার ছিল ২ লাখ ২৬ হাজার ১৬৫ কোটি টাকা। তার মধ্যে খরচ হয়েছে মাত্র ১ লাখ ৫২ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা। এদিকে এ বিষয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টদের মতে, বিদায়ী অর্থবছরের শুরুতেই ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়ে। বেশ কয়েকদিন কারফিউ জারি ছিল, বন্ধ ছিল সরকারি অফিস ও কাজ। রাজনৈতিক ক্ষমতার পালাবদলের ফলে অনেক প্রকল্প পরিচালকের খোঁজ মেলেনি। অনেক ঠিকাদারও দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। ফলে বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে অর্থনীতিবিদদের মতে, অতীতে সরকারের পক্ষ থেকে যেসব ঋণ নেয়া হয়েছিল তার মধ্যে বেশকিছু ফেরত দেয়ার সময় হয়েছে। ২০২৪ সাল থেকেই ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়তে শুরু করেছে। আর প্রকল্প বাস্তবায়নের ওপর বৈদেশিক সহায়তার অর্থছাড় নির্ভর করে। ফলে প্রকল্প বাস্তবায়ন না হলে অনেক সময় সহায়তার অর্থ পাইপলাইনে থেকে যায়, ছাড় করা হয় না। দেশের রাজনৈতিক অবস্থার কারণে অর্থ ব্যয় কম হয়েছে, বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। যে কারণে বৈদেশিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি কমেছে। তাতে স্বাভাবিকভাবেই অর্থছাড়ের পরিমাণও কমে এসেছে। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নে দক্ষতা যত বাড়বে, নতুন সহায়তার প্রতিশ্রুতি এবং অর্থছাড়ের পরিমাণ দুটোই বাড়বে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স